নলকূপ খননের জন্য বিভিন্ন প্রকার পদ্ধতি আছে। তার মধ্যে চারটি পদ্ধতি বেশি প্রচলিত। যেমন-
১. হস্তচালিত ঢেঁকি খনন পদ্ধতি
২. সংঘটন বা প্রক্ষেপণ খনন পদ্ধতি
৩. পানির বিচ্ছুরণ বা ওয়াটার জেট খনন পদ্ধতি
৪. ঘূর্ণি খনন বা রোটারি খনন পদ্ধতি
হস্তচালিত ঢেঁকি খনন পদ্ধতি (Manual Boring Method)
এই খনন পদ্ধতি তিনজন মানুষের কায়িক শ্রম মাধ্যমে এবং ঢেঁকির কার্যপদ্ধতির মাধ্যমে সম্পাদিত হয়ে থাকে। দেড় ইঞ্চি ব্যাসের হস্তচালিত নলকূপ খননের বেলার আমাদের দেশে সাধারণত এই পদ্ধতি ব্যবহার করা হয়ে থাকে। এটি খুবই প্রচলিত এবং আর খরচে সম্পন্ন হয়ে থাকে। এ পদ্ধতিতে বাঁশের তৈরি ঢেঁকির মতো একটি ফ্রেম এবং এর সাথে আনুমানিক কার্যক্রমের জন্য আরো একটি বাঁশের ফ্রেম তৈরি করে ব্যবহার করা হয়। এ পদ্ধতিতে দেড় ইঞ্চি ব্যাসের জিআই পাইপের সাহায্যে নলকূপের গর্ত খনন করা হয়।
সংঘটন বা প্রক্ষেপণ খনন পদ্ধতি (Percussion or Boring Method) নরম পলিমাটির এলাকায় এই পদ্ধতিতে নলকুপ খনন করা হয়ে থাকে। এতে খরচ কিছুটা কম এবং কাজও বেশ সহজ। তাই আমাদের দেশে অধিকাংশ অগভীর নলকুপ সাধারণত এই পদ্ধতিতে খনন করা হয়ে থাকে। এতে যান্ত্রিক ও কায়িক শ্রমের মিশ্রণ ঘটে থাকে। এ পদ্ধতির নলকূপ খনন করতে প্রথমে একটি চৌবাচ্চার মাঝখানে নলকূপের চেয়ে বেশি ব্যাসের কেসিং পাইপ বসানো হয় এবং ঠিক তার উপরে ট্রাইপড স্ট্যান্ড স্থাপন করা হয়। ট্রাইপড স্ট্যান্ড হতে চেইন গুলির সাহায্যে নিচের মাথার কাটার (Cutter) সংযুক্ত ৰোবিং পাইপ ঝুলিয়ে ফেসিং পাইলের মধ্যে নামানো হয়। বোরিং পাইপের উপরের মাথায় হোজ পাইপ সংযুক্ত করা থাকে যার অপর প্রা একটি পাম্পের ডেলিভারি লাইনের সাথে যুক্ত করা থাকে। এই গাম্পের সাহায্যে হোজের মাধ্যমে বোরিং পাইগে পানির প্রবাহ সৃষ্টি করে বোর ছোলের শেষ প্রান্তে কাটারের ভিতর দিয়ে মাটিতে নিক্ষিপ্ত হয়। এভাবে একই সাথে বোরিং পাইপের কাটারের আঘাতে ও পানি প্রবাহের দ্বারা নলকূপের গর্ত খনন করা হয় ।
পানি ও কাটারের আঘাতে মাটি গলে দিয়ে খোলা পানি হিসেবে বোরিং পাইপ ও কেসিং পাইপের মাঝখান দিয়ে উপরে উঠে আসে। উপরের চিত্রের মাধ্যমে এই পদ্ধতির নলকুপ খনন প্রক্রিয়া বুঝানো হলো ।
পানির বিচ্ছুরণ বা ওয়াটার ডেট করুন পদ্ধতি (Water Jet Baring Method)
শক্ত কদম অথচ পানিতে দ্রবণীর মাটিতে নলকূপ খননের জন্য এ পদ্ধতি ব্যবহার করা হয়। ট্রাইপডের সাহায্যে কেসিং পাইপটিকে কাঁচা চৌবাচ্চার উপর লভাবে ধরে কেসিং পাইপের মধ্য দিয়ে একটি পানির জেট ল (Water Jet Pipe ) जমনভাবে প্রবেশ করিয়ে দিতে হয়, যেন ঐ নলের এক প্রায় কেসিং পাইপের নিচের দিকে মাটির স্তরে গিয়ে ঠেকে। পানির জেট নলের ঐ প্রান্তে একটা নল (Nazzle) লাগানো থাকে এবং অপর প্রাপ্ত ভূ-জলের উপরে একটা পাম্পের সাথে সংযুক্ত করা থাকে । ঐ পাম্পের সাহায্যে পানির জেট নলের মধ্য দিয়ে পানি সজোরে প্রবেশ করে এবং তা নজলের মুখ দিয়ে কেসিং পাইপের নিচের প্রান্তে মাটিতে সজোরে আঘাত করে। ফলে ফেসিংয়ের নিচের মাটি নরম ও আলগা হয়ে পানিতে গলে যায়। তখন কেসিং পাইপ তার নিজের খচ্ছদের ফলে এবং উপর থেকে পাইপ ব্রেঞ্চের সাহায্যে বা অন্য কোনো পদ্ধতিতে ডানে-বায়ে ঘোরানোর ফলে নিচের নরম মাটির মধ্যে দেখে যেতে থাকে। গলিত মাটির ঘোলা পানি মঙ্গলের পানি প্রবাহের চাপে কেসিং পাইপ ও পানির জেট দলের মাঝের ফাঁকা স্থান নিয়ে উপর দিয়ে উঠে আসে। এভাবে আস্তে আস্তে নির্দিষ্ট গভীরতায় নলকূপের গর্ত খনন করা হয়ে থাকে।
ঘূর্ণি ওম বা রোটারী প (Rotary Drilling Method)
সাধারণত নরম অথচ আঠালো মাটিতে এই পদ্ধতি ব্যবহার করা হয়ে থাকে। এই পদ্ধতি পূর্বের খ) অনুচ্ছে বৰ্ণিত সংঘটন বা প্রক্ষেপণ পদ্ধতি (Percussion or Boring Method) এর অনুরূপ। এখানে পার্থক্য হলো, বোরিং পাইপের মাথার পাইপের চেয়ে বেশি ব্যাস বিশিষ্ট কার্টার (Cutter) সংযুক্ত থাকে এবং এতে কোনো কেসিং পাইপ স্থাপন করা হয় না। দ্বিতীয় পার্থক্য হলো, বোরিং পাইপ যারা উপর থেকে নিচে দিে আঘাতের পরিবর্তে এখানে বোরিং পাইপকে ঘুরিয়ে নলকূপের পর্ডের তলদেশের মাটি কাটা হয়। মাটির গণিত ঘোলা পানি পাইপ ও মাটির তৈরি গর্ডের মাঝখান নিয়ে উপরে উঠে আসে।
আরও দেখুন...